আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালে বিভিন্ন ধরনের রসালো ও পুষ্টিগুনে ভরপুর মিষ্টি ফল পাওয়া যায়। বিভিন্ন ফলে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন পুষ্টিগুণ। ফল আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি মানব দেহের বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শরীরে শক্তি জোগান দেই। এ ছাড়া প্রায় সব ফলেই পানি থাকায় এই ফলগুলো আমাদের শরীরের পানিশুন্যতাও দূর করতে সাহায্য বেশ কার্য্যকরি ভূমিকা রাখে।
আমাদের দেশীয় ফলগুলোর মধ্যে জাম পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি ফল। এ ফলটিতে রয়েছে খাদ্য শক্তি, আঁশ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, শর্করা, ক্যারোটিন, চর্বি, আমিষ ও ভিটামিন-সির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। এই ফলটি ত্বক টান টান করতে ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া ফলটির রয়েছে অনেক রকমের গুণাবলি যা মানব দেহের কার্য্যক্ষম বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
জাম ফলের বিভিন্ন নাম
জামের পুষ্টি উপাদান
- আমিষ রয়েছে - ৯.১ %
- স্নেহ রয়েছে - ৪.৩ %
- আঁশ রয়েছে - ১৭.০ %
- ছাই রয়েছে - ৭ %
- ক্যালসিয়াম রয়েছে - ১.৩ %
- ফসফরাস রয়েছে - ০.১৯ %
জাম ফলের নানান ব্যবহারবিধি সম্পর্কে জানুন
আরও জানুন 👇
ডিমের পুষ্টিগুন ও ডিমের উপকারিতা এবং ডিম খাওয়ার সঠিক নিয়ম
আনারস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টি উপাদান
কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা । ঘরে বসেই কিসমিস তৈরির নিয়ম
তেলের উৎপন্ন ও প্রকারভেদ এবং তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা ?
জাম ফল খাওয়ার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে নিচে দেয়া হলো
রক্ত পরিস্কার রাখতে
চোখের যত্নে
ত্বকের সমস্যা
যাদের ত্বকের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত জাম খেলে ত্বকের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে । এই ফল ত্বক টান টান করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া জাম খেলে ত্বকের ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস ইত্যাদির সমস্যা দূর করে এবং ত্বককে করে তোলে উজ্জ্বল ও লাবন্যময়।
হজমের সমস্যা
জাম খেলে পেট ঠান্ডা হয়, ফলে দ্রুত হজম হয়ে যায়। যাদের অম্বলের সমস্যা আছে, তারা বেশি করে জাম খেলে উপকার পাবেন।
খাবার খাওয়ার পর অনেকেই হজমজনিত নানা সমস্যায় ভুগে থাকেন। হজমের সমস্যার সমাধানে জাম অনেক উপকারী একটি ফল। পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে, জাম হজমশক্ত্র কার্য্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ডায়েটারি ফাইবারের অন্যতম কার্যকরী উৎস হওয়ার কারণে জাম ফল নিয়মিত খাওয়ার ফলে যেমন হজমশক্তি বাড়ে তেমনি হজমসংক্রান্ত নানান সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া জাম ফল লিভারকে ভালো রাখতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
জামে ফসফরাস ও পটাশিয়ামজাতীয় খনিজ থাকার কারণে এই ফল হৃদযন্ত্রের জন্য অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখতে বেশ কার্য্যকরি । একারণে জামের মৌসুমে নিয়মিত এই ফলটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
রোগ প্রতিরোধ
জাম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। জাম ফলে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬ ও ভিটামিন সি রয়েছে যা মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্য্যকরি ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া জামের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে এটি শরীরের ভেতরের এবং বাইরের সংক্রমণকেও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
দাঁতে এবং হাড়ের জন্য উপকারী
জাম ফল দাঁত এবং হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে। জাম ফলে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও আয়রন থাকার কারণে এই ফল দাঁত ও হাড়কে মজবুত রাখতে সাহায্য করে। দুধের সঙ্গে জামের গুঁড়া মিশিয়ে খেলে আরও ভালো ফল পাওয়া যায় ।
ডায়াবেটিস রোগে উপকারি
জামে কম গ্লাইসেমিক সূচক থাকার কারণে এই ফলটি রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী এই জাম। এ ছাড়া ডায়াবেটিস রোগীদের ঘন ঘন তৃষ্ণা ও প্রস্রাব এবং দুর্বলতা সমস্য কমাতেও সাহায্য এই ফলটি।
জাম ফলের সংক্ষিপ্ত বিবরন
আরও পড়ুন 👇
জাম খাওয়ার সতর্কতা
তথ্যসূত্র - উইকিপিডিয়া - যুগান্তর
চিত্রসূত্র - pexels
0 Comments