ছবিসূত্র - নিজ বাড়ির আঙিনা |
কলমি শাক পানিতে বা ভেজা মাটিতে হয়ে থাকে। কলমি শাকের ডাঁটাগুলো দুই থেকে তিন মিটার বা আরো বেশি দীর্ঘ হয়। ডাঁটার গিঁট থেকে শেকড় বের হয়।কলমি শাকের ডাটা ফাঁপা হওয়াই এই শাক পানির উপরে ভেসে থাকতে পারে। কলমি শাকের পাতা অনেকটা লম্বাটে ত্রিকোণাকার মত হয়ে থাকে, এবং ৫ থেকে ১৫ সেমি দীর্ঘ হয় এবং ২ থেকে ৮ সেমি চওড়া হয়ে থাকে। কলমির ফুল অনেকটা ট্রাম্পেট আকৃতির মতো। ফুলের রঙ হয় সাদা এবং গোড়ার দিকটা হয় বেগুনি।
কলমি শাকের ফুলে বীজ হয়, আর এই বীজ থেকেও গাছ লাগানো যায়।
কলমিশাকে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ । কলমি শাক স্বল্পমুল্যে ও সব জায়গায় পাওয়া যায় ।
কলমি শাকে রয়েছে ক্যালসিয়াম, লোহা ও অন্যান্য পুষ্টিগুন । এছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ , ভিটামিন বি , ভিটামিন সি ।
কলমি শাকে ভিটামিন বি-১ রয়েছে প্রচুর পরিমানে যা কচুশাক, পুঁইশাক, হেলেঞ্চা ও থানকুনির চেয়ে অনেক বেশি অর্থাৎ থায়ামিন রয়েছে প্রচুর পরিমাণে।
আরও জানুন - লাল শাকের উপকারিতা ও চাষ পদ্ধতি
কলমি শাকের পুষ্টি তথ্যঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম কলমি শাকের পুষ্টিমানঃ
- ভিটামিন সি – ৪৯ মিলিগ্রাম,
- ক্যালোরি – ৩০ কিলো ক্যালোরি।
- আমিষ – ৩ ৯ গ্রাম,
- পানি- ৮৯ ৭ গ্রাম,
- ক্যালসিয়াম – ০ ৭১ মিলিগ্রাম,
- থায়ামিন – ০ ৯ মিলিগ্রাম,
- নায়াসিন – ১ ৩ মিলিগ্রাম,
- লৌহ – ০ ৬ গ্রাম,
- শ্বেতসার – ৪ ৪ গ্রাম,
- আঁশ – ১ ৪ গ্রাম ।
আরও পড়ুন - ঠান্ডা সর্দি সারাতে জেনে নিন ঘোরোয়া উপায়
কলমি শাকে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের জন্য কলমিশাক সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
কলমিশাকের পাতায় ও কাণ্ডে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে। আঁশ আমাদের খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে, পরিপাক ও বিপাক ক্রিয়ায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে কলমিশাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় হয় এবং শরীর সুস্থ রাখে।
কলমিশাকে থাকা ভিটামিন বি-১ স্নায়ুতন্ত্রকে সবল ও স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সাধনে সাহায্য করে থাকে।
কলমিশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিন । এই ক্যারোটিন থেকে আমাদের শরিরে ভিটামিন-এ তৈরি হয়ে থাকে। ভিটামিন-এ চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
ঘি এর সাথে কলমিশাকের রস মিশিয়ে সকাল ও বিকেলে নিয়মিত খেলে প্রসূতি মায়ের বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
কলমি শাকের দুই চামচ রস ,গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি বাড়ে ।
দাঁত, মাড়ি ও পেশি মজবুত করতে সহায়তা করে কলমি শাকে থাকা ভিটামিন-সি । এ ছাড়াও ভিটামিন-সি সর্দি-কাশি ও ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা করে দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ।
মানবদেহে ফোড়া হলে কলমি শাকের পাতা ও একটু আদাসহ বেটে ফোড়ার চারিপাশে লাগালে ফোড়া গলে যায় এবং পুঁজ বেরিয়ে ফোড়া শুকিয়ে যায় ।
পোকামাকড় , পিঁপড়া কিংবা মৌমাছি কামড়ালে কলমি শাকের পাতা ডগা সহ রস করে, কামড়ানো স্থানে লাগালে যন্ত্রণা কমে যায়।
কারো যদি কোষ্ঠ কাঠিন্য থাকে তাহলে কলমি শাকের কিছু পাতা বেটে রস করে ,আখের গুড়ে সঙ্গে মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল নিয়মিত এক সপ্তাহ খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।
আমাশয়ও রোগিদের জন্যও এ শরবত খুবই কার্য্যকরি ।
কলমি শাক বেশি করে রসুন দিয়ে ভেজে গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরিরে যে পানি আসে এমন অবস্থায় তিন সপ্তাহ খাওয়ালে পানি কমে যায় ।
প্রসূতি মায়েদের জন্য কলমিশাকঃ
শিশুরা যদি মায়ের দুধ কম পায় তাহলে কলমি শাক ছোট মাছ দিয়ে রান্না করে খেলে মায়ের দুধ বৃদ্ধি পায় ।
1 Comments
আজ থেকে কলমি শাক আমিও নিয়মিত খাবো,উপকৃত হলাম
ReplyDelete